বাকাশিবো নোটিশ

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড – বাকাশিবো

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড
লিখেছেন Ali Hasan Titu
এই আর্টিকেলে মূলত বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সংক্রান্ত সকল প্রকার তথ্য সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপনা করা আছে। আর্টিকেল পড়া শেষে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সম্পর্কে স্বচ্ছ ও সঠিক ধারণা তৈরি হবে। একই সাথে বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত বিভিন্ন শিক্ষাক্রম ও ইনস্টিটিউট সম্পর্কে নির্ভুল ধারণা হবে।

মানব সম্পদ উন্নয়নে যে কোন দেশের জন্য কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষার ভূমিকা অনস্বীকার্য। মানব সম্পদ যদি দক্ষ হয় তবেই সেই দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারে। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কাজ করে যাচ্ছে। একই সাথে দেশের সরকারি মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে অধিদপ্তর ও বিভিন্ন সংস্থা কাজ করছে। বাংলাদেশ শিক্ষা ব্যবস্থা প্রধানত তিনটি বিভাগে বিভক্ত। তার ভিতর একটি হচ্ছে বাংলাদেশ কারিগরি বা বৃত্তিমূলক শিক্ষা।

ইতিহাস – বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড যার সংক্ষিপ্ত নাম হচ্ছে বাকাশিবো। দেশ বিভক্ত হওয়ার আগে ১৯৫৪ সালে তখনকার বাণিজ্য ও শিল্প বিভাগ-এর ভাইড রেজুলেশন নং. ১৮৮-আইএনডি. তারিখ ২৭-০১-১৯৫৪ মোতাবেক একটি বোর্ড স্থাপিত হয়েছিল। যার নাম ছিল “ইস্ট পাকিস্থান বোর্ড অব এক্সামিনেশন ফর টেকনিক্যাল এডুকেশন”। এই বোর্ডের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার অগ্রগতি ত্বরান্বিত করা। একই সাথে কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য সংগঠিত সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা, তদারিক ও নিয়ন্ত্রন করা। পাশাপাশি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নের জন্য দায়িত্ব পালন করা, শিক্ষার্থীদের পরিক্ষা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রন করা এবং বোর্ড কর্তৃক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ব্যক্তিবর্গকে ডিপ্লোমা বা কোর্স ভিত্তিক সার্টিফিকেট প্রদান করা।

সময়ের পরিপেক্ষিতে এবং হাতে কলমে শিক্ষার চাহিদা অনুযায়ী ১৯৬৭ সালের ৭ মার্চ “টেকনিক্যাল শিক্ষা আইন, ১৯৬৭” প্রণায়ন করা হয়। যেখানে কারিগরি শিক্ষার মান উন্নয়নে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এবং বিভিন্ন ট্রেড কোর্সের জন্য নিজস্ব পাঠ্যক্রম তৈরি ও প্রণয়ন, উন্নয়ন, নিয়ন্ত্রণ, সনদপত্র প্রদান, পরিদর্শন ও মূল্যায়নের জন্য বিধি বা নিয়মের উল্লেখ আছে। যাকে বলা হয়ে থাকে সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। ফলে ১৯৬৭ সালের ৭ মার্চ গেজেট নং-১৭৫ এল.এ প্রকাশিত এই প্রতিষ্ঠানের নাম হয় “ইস্ট পাকিস্তান টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ড”।

বর্তমানে এই বোর্ডের নাম হচ্ছে “বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড”। সময়ের প্রেক্ষিতে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন পরিবর্তন ও পরিমার্জিত করণের মাধ্যমে বর্তমানে “টেকনিক্যাল শিক্ষা আইন, ১৯৬৭” রহিতক্রমে “বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড আইন, ২০১৮” নামে অভিহিত হয়েছে, বাংলাদেশ আইন তথ্য মতে।

উদ্দেশ্য – বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড নিম্নে বর্ণিত উদ্দেশ্যগুলো সঠিক ও সাবলীলভাবে পরিচালনার করার প্রত্যয়ে যাত্রা শুরু করে।

  • কারিগরি শিক্ষার মান উন্নয়ন সহ সরকারি এবং বেসরকারি সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তত্ত্বাবধান করবে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
  • কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহকে অনুমোদন ও কোর্স বাছাইকরণে সহয়তা করবে বাকাশিবো।
  • শিক্ষার্থী ভর্তি এবং ভর্তি সংক্রান্ত সকল নীতিমালা প্রণয়ন করবে বাকাশিবো।
  • শিক্ষা ও শিক্ষাক্রমের ব্যবহৃত সকল উপকরণ প্রস্তুত করবে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
  • সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি ও প্রণয়ন করবে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
  • বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত সকল শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট বা সনদ প্রদান করবে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।

অবকাঠামো – বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড(বাকাশিবো) অর্গানোগ্রাম
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড – বাকাশিবো অর্গানোগ্রাম

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এর অবকাঠামো হচ্ছে কেন্দ্রীভূত আকৃতি। এই অবকাঠামোতে মোট ১১১টি পদ আছে। শ্রেণী পর্যায়ে বিভক্ত করলে দাঁড়ায়, প্রথম শ্রেণীর মোট কর্মকর্তা ২০ জন। দ্বিতীয় শ্রেণীর মোট কর্মকর্তা ৮ জন। তৃতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা ৪৮ জন, চতুর্থ শ্রেণীর মোট কর্মকর্তা ২৫ জন। এবং কম্পিউটার সেল-এ আছে ১০ জন। অবকাঠামোতে প্রধান হচ্ছে বাংলাদেশ কারিগরি বোর্ডের চেয়ারম্যান। পরবর্তি ধাপে আছেন প্রশাসনিক, কারিকুলাম ও পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক বিভাগ। পরবর্তি ধাপে আছে স্টাবলিশমেন্ট, রেজিস্ট্রেশন, রিসার্চ সেল, প্রেস সেকশন, ইভালুয়েশন উইং, ডকুমেন্টশন, এক্সামিনেশন(ডিপ্লোমা), এক্সামিনেশন(সার্টিফিকেট) ও কম্পিউটার সেল। উপরের ছবিতে পুরো আকৃতি(স্ট্রাকচার) দেওয়া আছে।

কার্যক্রম – বাকাশিবো

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড নিম্ন বর্ণিত কাযক্রমগুলো পরিচালনা করে থাকে।

  • কোর্স পরিচালনা সংক্রান্ত সকল প্রকার দিক-নির্দেশনা প্রধান করে থাকে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
  • শিক্ষার্থীদের শেখার উপকরণ প্রস্তুত করে থাকে বাকাশিবো।
  • বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পরিচালনা করে থাকে একই সাথে নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহকে অনুমোদন করে থাকে।
  • শিক্ষার্থী ভর্তি এবং বদলী সংক্রান্ত চূড়ান্ত নির্দেশনা প্রদান করে থাকে বোর্ড।
  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা দেওয়ার পদ্ধতি ও ক্রিয়াকলাপ পরিদর্শন করে থাকে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
  • শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন সম্পূর্ণ করে থাকে বাকাশিবো।
  • পরিক্ষা পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রন করে একই সাথে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন ও ফলাফল প্রকাশ করে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
  • ফলাফল প্রকাশের পর একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, সার্টিফিকেট তৈরি এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছে হস্তান্তর করে থাকে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
  • পাশকৃত শিক্ষার্থীদের ডিপ্লোমা সার্টিফিকেট অথবা সনদ প্রধান করে বাকাশিবো।
  • শিক্ষক এবং অধিভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহের মাঝে সমঝোতা তৈরি করে থাকে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
  • বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড এর নতুন পদ তৈরি ও বিলুপ্তি সহ সকল প্রকার প্রশাসনিক বিষয় নিয়ন্ত্রণ করে থাকে উক্ত বোর্ড।
  • নিদিষ্ট ফি নির্ধারণ করা এবং উক্ত ফি আদায় করে থাকে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।
  • বৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের নির্ধারণ করা এবং শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে বোর্ড একই সাথে ভালো রেজাল্ট অর্জনকারি শিক্ষা প্রতিষথান ও শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মেডেল ও পুরস্কার দিয়ে থাকে।
  • তাছাড়া কারিগরি শিক্ষার সাংগঠনিক নিয়ন্ত্রণ, তত্ত্বাবধান, নিয়ন্ত্রণ, ব্যবস্থাপনা এবং উন্নয়নের উদ্দেশ্য প্রয়োজনী কার্যক্রম ও ক্রিয়াকলাপ সম্পাদন করে থাকে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড।

পাঠ্যক্রম/কারিকুলা ও কোর্স – বাকাশিবো

বাকাশিবো “বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড আইন, ২০১৮” অনুযায়ী মোট ১৪ টি প্রধান ক্যাটাগরিতে ডিপ্লোমা সনদ ও বিভিন্ন মেয়াদী সার্টিফিকেট প্রদান করে থাকে। যেমনঃ

ডিপ্লোমা পর্যায়ের কারিগরি ও বৃত্তিমূলকঃ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি এবং ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা পর্যায়ের পাঠ্যক্রম হচ্ছে এই ক্যাটাগরি। এই পর্যায়ে মূলত ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিপ্লোমা ইন এগ্রিকালচার, ডিপ্লোমা ইন ফিসারিজ, ডিপ্লোমা ইন ফরেস্ট্রি, ডিপ্লোমা ইন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিপ্লোমা ইন লাইভস্টক ও ডিপ্লোমা ইন মেডিক্যাল অন্তর্ভুক্ত।। অর্থাৎ চার বছর মেয়াদী সকল ডিপ্লোমা কোর্স এই ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত।

মাধ্যমিকোত্তর সার্টিফিকেটঃ তিন বছর মেয়াদী এই কারিকুলামে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের এসএসসি বা সমমান পরিক্ষায় উর্ত্তীন হতে হবে। সার্ভেয়িং, ডিপ্লোমা ইন ফিসারিজ(ইন সার্ভিস) এবং ডিপ্লোমা ইন এগ্রিকালচার(ইন সার্ভিস) কোর্স চালু আছে এই কারিকুলামে।

বিজনেস ম্যানেজমেন্ট টেকনোলজি ও এইচএসসি ভোকেশনালঃ বিএমটি ও এইচএসসি ভোকেশনাল কোর্সের মেয়াদ সাধারণত ২ বছর মেয়াদী। এসএসসি ভোকেশনাল বা তার সমমান সার্টিফিকেট অর্জনকারীরা ভর্তি হতে পারে। বিএমটি বর্তমানে ৫টি ও এইচএসসি ভোকেশনালে ১৪টি ট্রেড চালু আছে।

মাধ্যমিকোত্তর পর্যায়ের সার্টিফিকেটঃ চারটি ক্যাটাগরিতে মোট ২৪টি কোর্স পরিচালিত হয়। এই কোর্সের মেয়াদ ১ বৎসর। এসএসসি বা সম পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এই কোর্সে ভর্তি হতে পারে। শুধুমাত্র ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল আল্ট্রাসাউন্ড-এ ভর্তির যোগ্যতা হচ্ছে এমবিবিএস বা সমমান।

যে কোন মেয়াদে সার্টিফিকেট কোর্সঃ শিক্ষার সকল ধারা ও স্তরের আনুষ্ঠানিক কোর্সের সনদপ্রাপ্তদের জন্য যে কোন বিষয়ে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা এই কোর্স করতে সক্ষম। এই কোর্সের মেয়াদ হয়ে থাকে ১ বছর। ভর্তির যোগ্যতা হচ্ছে বিভিন্ন স্তরের আনুষ্ঠানিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।

প্রফেশনাল ডিপ্লোমা/ সার্টিফিকেট কারিকুলামঃ ডিপ্লোমাত্তোর পর্যায়ের জন্য যেকোনো বিষয়ে প্রফেশনাল এই সার্টিফিকেট অর্জনের জন্য সক্ষম। ডিপ্লোমা ইন অটোমোবাইল/ প্রফেশনাল সার্টিফিকেট ইন অটোমোবাইলসহ অনুরূপ কোর্স এই কারিকুলামের অন্তভুক্ত। এক বছর বা ছয় মাস মেয়াদী হয়ে থাকে এই কোর্স। ভর্তি নূন্যতম যোগ্যতা যেকোন কর্সে ডিপ্লোমা।

ডিপ্লোমা পর্যায়ের বাণিজ্যক প্রশিক্ষণ কোর্সঃ এই কারিকুলামে মানবসম্পদ ব্যবস্থপনা, একাউন্টিংসহ অনুরূপ কোর্সগুলো পরিচালিত হয়। এই কোর্সের দুই বছর। ভর্তির যোগ্যতা এসএসসি অথবা সমমান।

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কারিকুলাম
বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কারিকুলাম

ডিপ্লোমা ইন টেকনিক্যাল এডুকেশনঃ পলিটেকনিক, টেকনিক্যাল ইনস্টিতিউট এবং মনোটেকনিকগুলোতে শিক্ষক নিয়োগের জন্য এই কোর্স পরিচালিত হয়। কোর্সের মেয়াদ ১ বছর। সংশ্লিষ্ট টেকনোলজি বা ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্টে ডিপ্লোমা থাকলে ভর্তি হওয়া যায়।
(খ) বাণিজ্যিক/বিএমটি ইনস্টিটিউটের শিক্ষকদের জন্য ডিপ্লোমাত্তোর পর্যায়ের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সঃ কোর্সের মেয়াদ ১ বছর। যোগ্যতা বিশ্ববিদ্যালয় হইতে স্নাতক ডিগ্রি অথবা ডিপ্লোমা ইন কমার্শিয়াল ট্রেনিং এ উত্তীর্ণ।
(গ) মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের এবং শিক্ষক পদে নিয়োগ লাভের জন্য প্রশিক্ষণ কোর্সসমূহ যথাঃ প্রাক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্সঃ যোগ্যতা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় হইতে ন্যূনতম স্নাতক ডিগ্রি এবং মেয়াদ হচ্ছে ১ বছর।

ডিপ্লোমা ইন ভোকেশনাল এডুকেশনঃ কোর্সটি মূলত ভোকেশনাল শিক্ষকদের জন্য যা শিক্ষক প্রশিক্ষণ কোর্স নামে পরিচিত। ১ বছর মেয়াদী হয়ে থাকে এই কোর্স। ভর্তির যোগ্যতা হচ্ছে সংশ্লিষ্ট টেকনোলজি তে ডিপ্লোমা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।

এসএসসি ভোকেশনাল এবং দাখিল ভোকেশনাল অথবা সমমান পাঠ্যক্রমঃ এই কোর্স-এ ভর্তির জন্য মাধ্যমিক বা সমমানের প্রতিষ্ঠান হইতে জে.এস.সি ভোকেশনাল অথবা জে.এস.সি./ জে.ডি.সি. পাস উত্তীর্ণ হতে হয় এবং কোর্সের মেয়াদ ২ বছর। এই পাঠ্যক্রমের মোট ৩০টি ট্রেড কোর্স পরিচালিত হয়।

বেসিক ট্রেড এন্ড ক্রাফট প্রশিক্ষণ কোর্সসমূহঃ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড বেসিক ট্রেড এন্ড ক্রাফট প্রশিক্ষণ-এ ৭০টির অধিক কোর্স পরিচালনা করে থাকে। এই কোর্সগুলোর মেয়াদকাল হয়ে থাকে ৩৬০ ঘন্টা। মাধ্যমিক বা সমমানের প্রতিষ্ঠান হইতে জে.এস.সি ভোকেশনাল অথবা জে.এস.সি./ জে.ডি.সি. পাস উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারে এই কোর্সগুলোতে।

কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রোগ্রাম/দক্ষতা প্রশিক্ষণ কোর্সঃ এই পাঠ্যক্রমে মোট ৫টি কোর্স রয়েছে। কোর্সের মেয়াদ হয়ে থাকে ৩৬০ ঘন্টা যা তিন থেকে ছয় মাস হয়ে থাকে। এসএসসি বা তার সমমান শিক্ষার্থীরা এই কোর্সে ভর্তি হতে পারে।

ট্রেড সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে ট্রেড এবং হস্তশিল্প/ ক্র্যাফট প্রশিক্ষণ কোর্সঃ এই পাঠ্যক্রমে ভর্তির যোগ্যতা হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয় উত্তীর্ণ বা প্রি ভোক লেভেল-২। কোর্সগুলোর মেয়াদ হয়ে থাকে তিন থেকে ছয় মাস মেয়াদী। পাঠ্যক্রমটিতে ১৬টির ও অধিক কোর্স রয়েছে।

দক্ষতা সংশ্লিষ্ট সেক্টরসমূহের বিভিন্ন পেশা(অকুপেশন) সংক্রান্ত এনটিভিকিউএফ-এর আওতায় সিবিটিএন্ডএঃ এই পাথ্যক্রমে প্রায় ৮০টির ও অধিক কোর্স পরিচালনা করে থাকে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড। এই কোর্সগুলোতে ভর্তির যোগ্যতা ও মেয়াদ হচ্ছে কোর্সের এক্রিডিটেশন/স্বীকৃতি ডকুমেন্টে বর্ণিত।

বাকাশিবো কর্তৃক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধরণ ও সংক্ষিপ্ত বিবরণ

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত সকল কারিকুলাম বা পাঠ্যক্রম গুলো পরিচালনার জন্য সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারিভাবে মোট প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ১১,০০০ টি। এই আর্টিকেলে ইনস্টিটিউটগুলোর প্রধান প্রধান ক্যাটাগরিগুলো সম্পর্কে তুলে ধরা হল।

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটঃ ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠ্যক্রমে মোট ৩২ টি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট রয়েছে। এই ৩২টি ডিপার্টমেন্ট মোট ৪৩৯ টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে। ৫২ টি সরকারি এবং ৩৮৭ টি বেসরকারি।

টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটঃ ৮ টি ডিপার্টমেন্ট নিয়ে পরিচালিত ডিপ্লোমা ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পাঠ্যক্রম ১০টি সরকারি ও ২৩টি বেসরকারি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটে সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে। তাছাড়া টেক্সটাইল টেকনোলজি ২১০ টি বেসরকারি পলিটেকনিকে সমন্বয়ে পরিচালিত হচ্ছে।

মেরিন ইনস্টিটিউটঃ ২ টি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট পরিচালিত হয় ৬ টি সরকারি মেরিন ইনস্টিটিউটে এবং ৩৪ টি বেসরকারি পলিটেকনিকে। যা বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করে।

এগ্রিকালচার ইনস্টিটিউটঃ ডিপ্লোমা ইন এগ্রিকালচার ডিপার্টমেন্ট ১৮ টি সরকারি প্রতিষ্ঠানে ও ৫৪ টি বেসরকারি এগ্রিকালচার ইনস্টিটিউটে পরিচালিত হয়।

ফিসারিজ ইনস্টিটিউটঃ ডিপ্লোমা ইন ফিসারিজ ডিপার্টমেন্টটি পরিচালিত ৪ টি সরকারি ও ৫৪ টি বেসরকারি ফিসারিজ ইনস্টিটিউটে।

লাইভস্টক ইনস্টিটিউটঃ ডিপ্লোমা ইন লাইভস্টক ডিপার্টমেন্ট সারা দেশে মোট ৫ টি সরকারি লাইভস্টক ইনস্টিটিউটে পরিচালিত হয়।

ফরেস্ট্রি ইনস্টিটিউটঃ মোট ১ টি ফরেস্ট্রি ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা ইন ফরেস্ট্রি ডিপার্টমেন্ট পরিচালিত হয়।

মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটঃ ২২৮ টি সরকারি এবং বেসরকারি মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট ডিপ্লোমা ইন মেডিক্যাল পাঠ্যক্রমের ৬ টি টেকনোলজি পরিচালিত হচ্ছে।

তাছাড়া বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সারা দেশব্যাপী সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ, এসএসসি ভোকেশনাল, বেসিক ট্রেড ও এডভান্স সার্টিফিকেট কোর্সগুলো ১০,৫০০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালনা করছে।

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড হচ্ছে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রিত একটি শিক্ষা বোর্ড। তাই বাংলাদেশ কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা সংক্রান্ত সকল প্রকার নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড – এর উপর ন্যায্য। তবে বিভিন্ন কারিকুলাম অনুযায়ী বিভিন্ন ইনস্টিটিউট বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর অধীনে কার্যক্রম পরিচালনা করে।

Sending
User Review
4.86 (7 votes)
শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে

কন্টেন্ট সম্পর্কে আপনার মতামত লিখুন

নিউজ
চাকরি
Home
Question
Search