বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস এন্ড সিরামিকস বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট । এই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটটি ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে চার বছর মেয়াদী “ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং” প্রোগ্রামে সিরামিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও গ্লাস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ চালু রয়েছে। স্থাপনা থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত এই পলিটেকনিকের রয়েছে গৌরবময় সাফল্য। এই আর্টিকেলে মূলত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস এন্ড সিরামিকস সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরা হবে। তথ্যগুলো বিভিন্ন ভেরিফাইড অনলাইন রিসোর্স থেকে সংগ্রহ করা।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস এন্ড সিরামিকস এর ইতিহাস
এই ইনস্টিটিউটটি বর্তমানে রাজধানী ঢাকার ৯৫, শহীদ তাজ উদ্দীন আহমেদ সরনী, তেজগাঁও শিল্প এলাকায় অবস্থিত। এর উত্তরে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমে ঢাকা-টংগী মহাসড়কে অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৫১ সালের ১১ মার্চ “ইস্ট বেঙ্গল সিরামিকস ইনস্টিটিউট” নামে প্রতিষ্ঠিত হয়,১৯৬০ সালে “ইস্ট পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অব গ্লাস এন্ড সিরামিকস” নামে এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ আলাদা হওয়ার পর তা ১৯৭২ সালে পুনরায় পরিবর্তিত হয়, বর্তমান “বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস এন্ড সিরামিকস” নামে।
ইআইআইএন (EIIN) | ১৩২১৫৭ |
---|---|
ব্যবস্থাপনা | সরকারি |
শিক্ষার্থী ধরণ | সহশিক্ষা |
প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য | |
বাংলায় | বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস এন্ড সিরামিকস |
ইংরেজিতে (ব্লক লেটার) | BANGLADESH INSTITUTE OF GLASS AND CERAMICS |
স্থাপিত | ১৯৫১ |
ফোন | ৪৮১১৭৮৬৮ |
মোবাইল | ০১৭১২৪৭৭৯৫৩ |
ই-মেইল | PRINCIPAL_BIGC |
ওয়েবসাইট | WWW.BIGC.GOV.BD |
ক্যাম্পাস ভূমি | ২০ একর (৮.১ হেক্টর) |
ঠিকানা | |
হোল্ডিং নম্বর/রোড | ৯৫ শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ সারণি |
পোস্ট কোড | ১২০৮ |
উপজেলা/থানা | তেজগাঁও ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া |
জেলা | ঢাকা |
বিভাগ | ঢাকা |
মিশন ও ভিশন
মিশন
সমসাময়িক টেকসই প্রযুক্তিগত কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, কর্মসংস্থান, জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন, শিল্প সম্প্রসারণ এবং জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নতি।
ভিশন
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মৌলিক ট্রেড কোর্স প্রশিক্ষণের মান নিশ্চিত করার জন্য প্রধান কার্য সম্পাদন করা।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস এন্ড সিরামিকস এর সুযোগ সুবিধা
বাংলাদেশে অনান্য প্রতিস্থানের মত এটিতে শিক্ষার্থিদের মান উন্নয়ন এর জন্য রয়েছে অনেক সুযোগ সুবিধা। এটি বাংলাদেশের মধ্যে সবথেকে পুরাতন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হলেও এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ যেগুলোর দ্বারা প্রতিনিয়র্ত শিক্ষার্থীরা তাদের পড়ালেখার মান উন্নয়ন করে চলছে। এখানে শিক্ষার্থীতে ব্যবহার করার জন্য রয়েছে লাইব্রেরী, ওয়ার্কশপ, মাঠ,স্বাস্থ্যকেন্দ্র,আবাসিক হল,ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান(মসজিদ),পলিটেকনিক ডাক বিভাগ,ব্যায়ামাগার ও ক্যাফেটেরিয়া ইত্যাদি।নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
লাইব্রেরি
এই ইনস্টিটিউটে রয়েছে একটি বিশাল লাইব্রেরী যেখানে বিভিন্ন ধরনের বই রয়েছে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, কাচ ও মৃৎশিল্প, ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্যবস্থাপনা, সামাজিক বিজ্ঞান, বাংলা সাহিত্য, ইংরেজি সাহিত্য ইত্যাদি বিষয়ে বই রয়েছে। এছারাও জার্নাল, ম্যাগাজিন, নিউজপেপার ও অন্যান্য পর্যায়িক সামগ্রী রয়েছে। লাইব্রেরি তে মোট বই এর সংখ্যা ৪৫০০ টি।
ওয়ার্কশপ এবং ল্যাবরেটরি
বাংলাদেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস এন্ড সিরামিকস এর শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক এবং বাস্তবিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য রয়েছে আধুনিক মেশিন এবং বিভিন্ন যন্ত্রের সজ্জিত ওয়ার্কশপ ভবন। যেখানে শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক শিক্ষায় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিল্প উন্নয়নের সাথে নিজেকে কিভাবে গড়ে তুলা যায় তার দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়। এছারাও মোট তিনটা ল্যাব আছে তার মাঝে একটি হলো কম্পিউটার ল্যাব ও কেমিস্ট্রি ল্যাব।
মাঠ ও উন্মক্ত স্থান
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস এন্ড সিরামিক্স প্রতিষ্ঠানটির শরীর চর্চার জন্য একটি খেলাধুলার মাঠ রয়েছে। যেখানে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন খেলাধুলা করে থাকে এবং শরীর চর্চা করে থাকে, যেমনঃ ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন সহ বিভিন্ন আউটডোর খেলাধুলা এখানে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে এছাড়াও এই মাঠে বসার সুব্যবস্থা রয়েছে।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র
বর্তমানে আলাদা কোন স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই তবে একটি কক্ষ আছে। এই কক্ষে প্রাথমিক চিকিৎসা এর ব্যাবস্থা রয়েছে। যেখানে ছাত্র-ছাত্রিরা এবং শিক্ষকরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে থাকে।
আবাসিক হল
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ গ্লাস এন্ড সিরামিক্স ক্যাম্পাসের আওতাধীন একটা আবাসিক হল আছে যার নাম কবি নজরুল ছাত্রাবাস। যার পরিচালনায় দুই জন স্যার রয়েছেন।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান(মসজিদ)
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ গ্লাস এন্ড সিরামিক্স এ একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মুসলমানদের একটি মসজিদ রয়েছে। যেখানে মুসলমান শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা নামাজ আদায় করে থাকে।
শিক্ষকদের আবাসিক ভবন
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ গ্লাস এন্ড সিরামিক্স এ বর্তমানে মোট ৪ টি শিক্ষকদের আবাসিক ভবন রয়েছে।
ক্যাম্পাসে মোট শিক্ষক এবং কর্মচারী
অধ্যক্ষ | ১ জন |
চিফ ইনস্ট্রাকটর | ৪ জন |
ইনস্ট্রাকটর | ৯ জন |
ওয়ার্কশপ সুপার | ১ জন |
একাডেমিক কার্যক্রম
১৯৭৮ সালে এই বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ গ্লাস এন্ড সিরামিক্স প্রতিষ্ঠানটি আমেরিকার ওকলাহামা স্টেট ইউনিভার্সিটির কারিকুলাম অনুসরনে পরিচালিত তিন বৎসর মেয়াদি ডিপ্লোমা স্তরের প্রোগ্রামটি সিরামিক প্রকৌশল বিষয়ে Associate in Engineering নামে প্রত্যয়ন হতো। ২০০০ সালে “ডিপ্লোমা ইন গ্লাস ইঞ্জিনিয়ারিং” প্রোগ্রাম চালু করা হয়। পরবর্তীতে ২০০০ সাল থেকেই “ডিপ্লোমা ইন গ্লাস এন্ড সিরামিকস” ইঞ্জিনিয়ারিং এর মেয়াদ পরিবর্তন করে চার বছর মেয়াদী করা হয়।
ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার পাশাপাশি প্রত্যেক বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদের আবশ্যিকভাবে পাঠ্য, ইংরেজি,উচ্চতর গণিত,বাংলা,রসায়ন, ব্যবসায় শিক্ষা, সমাজ বিজ্ঞান, শারীরিক শিক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে পাঠদানের জন্য একটি অকারিগরি শিক্ষা বিভাগ রয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের সকাল ও দুপুর এই দুই শিফটে পাঠদান করা হয়। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ গ্লাস এন্ড সিরামিক্স (বিআইজিসি)-এর বর্তমানে৫ টি ডিপ্লোমা কোর্স আছে। যথাঃ
- Arts Faculty
- Arts Faculty
- Faculty of Business Administration
- Faculty of Sociology
- ICT & Others
শর্ট কোর্স
বর্তমানে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ গ্লাস এন্ড সিরামিক্স কোন আপাদত শর্ট কোর্স চালু নেই।
ছাত্র সংগঠন
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ গ্লাস এন্ড সিরামিক্স ছাত্ররা পড়ালেখার পাশাপাশি কিছু ছাত্র সংগঠনও করে থাকে। তবে বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলনের পর কোন ছাত্র সংগঠন নেই।
ছাত্রাবাস
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ গ্লাস এন্ড সিরামিক্স বর্তমানে আপাদত ২ টি ছাত্রাবাস রয়েছে। এছারাও আসে পাশে অনেক ম্যাচ আছে। সেখানেও ছাত্ররাও থাকে।
সাধারণত আমরা জানি যে বাংলাদেশের প্রতিটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর সম্পর্ক কিছু তথ্য আছে যেগুলো প্রায় একই থাকে বলা যায়, কারণ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হয় বলে। প্রত্যেকটি তথ্যগুলো আমরা ভেরিফাইড ওয়েবসাইট থেকে নিয়েছি এবং প্রত্যেকটি তথ্য গুলো আমাদের রিসার্চ করা যার ধরুন আপনি এখান থেকে খুব ফ্রেশ এবং আপডেট তথ্যগুলো জানতে পারবেন। সাধারণত আমাদের যে বিষয়গুলো বেশি জরুরি হয়ে থাকে যেমনঃ ভর্তির যোগ্যতা, কোর্সের সময়সীমা, শিক্ষা ব্যাবস্থা, পড়াশোনা খরচ, ছাত্রাবাস ইত্যাদি উল্লেখিত পয়েন্টগুলো ইনফরমেটিভ আর্টিকেলে দেওয়া হয়েছে।
মোহেবুল্লাহ হোসেন মুবিন, প্রকাশ ০৭, সেপ্টেম্বর, ২০২৪