ক্যারিয়ার প্রোফাইল

ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার

লিখেছেন Abinobo School

ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার” হলো কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে সিভিল টেকনোলজি বা ইঞ্জিনিয়ারিং কমপ্লিট করা ডিগ্রির উপাধি, যারা আধুনিক অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। সভ্যতার অগ্রগতির শুরু থেকেই মানুষ যখন ধীরে ধীরে বিভিন্ন আধুনিক অবকাঠামোর নির্মাণ যেমন দালানকোঠা, রাস্তাঘাট, বিমানবন্দর, স্থলবন্দর, পানি নিষ্কাশন, ড্রেনেজ সিস্টেম, হাসপাতাল, স্কুল, সুউচ্চ ভবন, সেতু, রাজপ্রাসাদ ইত্যাদি নির্মাণ করা শুরু করলো, তখন থেকেই মূলত পুরকৌশল বা ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সূত্রপাত। এটি প্রকৌশলের অন্যতম প্রাচীন একটি শাখা। গ্রীস সাম্রাজ্য থেকে শুরু করে মেসোপোটেমিয়া কিংবা পিরামিড, বিশ্বের প্রাচীন অনেক নিদর্শনই সভ্যতার বিকাশে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর গুরুত্ব ও ইতিহাস বহন করে৷

Table of Contents

ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর সারসংক্ষেপ

ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং একজন প্রকৌশলীকে শুধু অবকাঠামোগত পরিকল্পনা, নকশা, নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণই শিখায় না বরং একটি অবকাঠামো পর্যবেক্ষণ, জনসাধারণ ও পরিবেশের উপযোগী করে তুলতেও প্রস্তুত করে।

মূল দায়িত্বসমূহ: একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার একটি দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। যারা দেশের উন্নয়নে কাজ করতে চান তারাই মূলত সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বা পুরকৌশল বিদ্যায় পড়াশোনা করেন৷ একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের মূল দায়িত্বকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়, প্রথম, দায়িত্ব হচ্ছে নির্মাণের আগে অবকাঠামোর সম্ভাব্যতা যাচাইকরণ, পরিকল্পনা ও নকশা করা। দ্বিতীয়, যা নির্মাণের সময় করে থাকেন, ক্লায়েন্ট হ্যান্ডেলিং, পরামর্শ, ঠিকাদারের সাথে ডিল করা। সর্বশেষ, যা নির্মাণকাজের পরে করে থাকেন; রক্ষণাবেক্ষণ ও গবেষণা।

চাহিদা ও সুযোগ: বাংলাদেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা অনেক। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রকল্প যেমন আবাসন, রেল, সেতু, রাস্তাঘাট, বন্দর, হাইওয়ে, ভবন ইত্যাদি প্রকল্পে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের অনেক চাহিদা ও কাজের সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন এল জি ই ডি, গৃহায়ণ, সড়ক ও জনপদ বিভাগ ইত্যাদি সেক্টরেও কাজের সুযোগ রয়েছে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা উপ-প্রকৌশলী হিসাবেও উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন সরকারি চাকরিতে যুক্ত হতে পারেন।

দক্ষতা উন্নয়ন: সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের পেশাজীবনে প্রযুক্তিগত দক্ষতা, নকশা অঙ্কন ও দ্রুত সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা অপরিহার্য। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দলগত ভাবে করতে হয়, তাই দলগত কাজ করার অভিজ্ঞতা এই সেক্টরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। একজন ডিপ্লোমা সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ছাত্রাবস্থায় তার দক্ষতার উৎকর্ষ সাধন করে পেশাজীবনে ভালোই সাফল্য লাভ করতে পারেন।

ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার পেশার ইতিহাস

প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস দেখে ধারণা করা যায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পেশার শুরুটা সেই প্রাচীন কাল থেকেই। খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ বা ২০০০ থেকে মূলত সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর অনুশীলন শুরু হয়েছে। ধারণা করা হয়, মেসোপোটেমিয়া বা মিশরের প্রাচীন সভ্যতা সর্বপ্রথম সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর অনুশীলন শুরু করে। মিশর, সিন্ধু সভ্যতা, রোমান একোয়েডাক্ট এবং চীনের গ্রেট ওয়াল ইত্যাদি প্রাচীন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর নিদর্শন। ১৮শ শতাব্দীতে ফ্রান্সে ব্রিজেস এন্ড হাইওয়েজ করপোরেশন গঠিত করা হয় ও পরবর্তীতে ন্যাশনাল স্কুল অফ ব্রিজস এন্ড হাইওয়ে দিয়ে পাঠ্যসূচিতে অফিশিয়ালভাবে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর সূচনা হয়। তারপর ব্রিটিশরা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষেত্রকে আরও উন্নতি সাধন করেন।

বাংলাদেশে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পেশার বিকাশ ও প্রসার ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে শুরু হয়। তখন ব্রিটিশরা আমাদের অঞ্চলে রেলপথ, সেতু এবং শহর পরিকল্পনার কাজ করে। পরবর্তীতে স্বাধীনতার পর, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার উন্নতি এবং অবকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় সকল পাব্লিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এর শাখা রয়েছে।

এক নজরে ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার

সিভিল ইঞ্জিনিয়ার পেশা, প্রযুক্তি ও বাস্তব অভিজ্ঞতার মিশেলে একটি চ্যালেঞ্জিং এবং আকর্ষণীয় পেশা বা ক্যারিয়ার, যেখানে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই পেশা নিয়ে নিচের চকে প্রদান প্রদান তথ্যগুলো তুলে ধরা হল।

সাধারন পধবীসিভিল ইঞ্জিনিয়ার
বিভাগইঞ্জিনিয়ারিং
শিক্ষাগত যোগ্যতাডিপ্লোমা ডিগ্রি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ
প্রতিষ্ঠানের ধরণসরকারি/বেসরকারি/প্রাইভেট কোম্পানি/ফার্ম
ক্যারিয়ারে ধরণফুল টাইম
লেভেলএন্ট্রি/মিড/টপ
প্রধান দায়িত্বসমূহঅবকাঠামো নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা
টেকনিক্যাল স্কিলঅটোক্যাড (AutoCAD), স্ট্রাকচারাল অ্যানালাইসিস সফটওয়্যার, প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার, জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (GIS) এবং রিভিট (Revit)।
সফট স্কিলকমিউনিকেশন, প্রবলেম সলভিং, লিডারশীপ, টাইম ম্যানেজমেন্ট, ক্রিয়েটিভিটি এবং এটেনশন টু ডিটেইলস।
বেতন কাঠামোবেসরকারি ক্ষেত্রে ইন্টার্ন অবস্থায় ৮ হাজার থেকে শুরু করে প্রজেক্ট ভিত্তিক ১ লক্ষ বা তার বেশি হয়ে থাকে। সরকারিতে ১০ম গ্রেডের বেতন থেকে শুরু হয়।
টেবিলঃ ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার পেশা সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত তথ্য।

ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার যোগ্যতা

যে কোন শিক্ষা বোর্ড অথবা বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হতে এস.এস.সি/দাখিল/এস.এস.সি (ভোকেশনাল)/দাখিল (ভোকেশনাল) /সমমানের পরীক্ষা অথবা ‘ও’ লেভেল এবং জিপিএ পদ্ধতি চালুর পূর্বের এস.এস.সি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ নিম্নোক্ত যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষার্থীরা শিক্ষাবর্ষে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।

সরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি
এস.এস.সি/সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ পদ্ধতিতে উত্তীর্ণদের জন্য:
ছাত্র: সাধারণ গণিত বা উচ্চতর গণিতে জিপি ২.০ সহ কমপক্ষে জিপিএ ৩.০।
ছাত্রী: সাধারণ গণিত বা উচ্চতর গণিতে জিপি ২.০ সহ কমপক্ষে জিপিএ ২.৫।

জিপিএ পদ্ধতির পূর্বের এস.এস.সি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের জন্য:
ছাত্র/ছাত্রী: ন্যূনতম ২য় বিভাগ।

‘ও’ লেভেলে উত্তীর্ণদের জন্য:
ছাত্র/ছাত্রী: একটি বিষয়ে ‘সি’ গ্রেড এবং গণিতসহ অন্য যেকোন দুটি বিষয়ে ন্যূনতম ‘ডি’ গ্রেড থাকতে হবে।
যে কোন শিক্ষা বোর্ড অথবা বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত এস.এস.সি/ দাখিল /এস.এস.সি (ভোকেশনাল)/ দাখিল (ভোকেশনাল) / সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কমপক্ষে জিপিএ ২.০ প্রাপ্ত।

অথবা ‘ও’ লেভেল এবং জিপিএ পদ্ধতি চালুর পূর্বে এস.এস.সি বা সমমান পরীক্ষায় যে কোন সালে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।

যেসকল প্রতিষ্ঠান ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ায়

  • সরকারিঃ বাংলাদেশের প্রায় ৩৩ টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে এবং ২০ টির মত টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ সমূহে ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়।
  • প্রাইভেটঃ একইভাবে বাংলাদেশ প্রায় প্রতিটি বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ানো হয়ে থাকে।

“ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার” ক্যারিয়ার এবং ভবিষ্যৎ কেমন

সিভিল ইঞ্জিনিয়ার দের চাকরীর ক্ষেত্র ব্যাপক। এক্ষেত্রে এটা বলা যায় বিশ্বে যতো উন্নয়ন ঘটবে, প্রত্যেকটা দেশ অবকাঠামোগতভাবে বা রাস্তা, ঘাট, সেতু, হাসপাতাল, সরকারি বিল্ডিং, উঁচু উঁচু স্থাপনা, পানি ব্যবস্থা, ড্রেনেজ সিস্টেম, পরিবেশ ও জনগণের ব্যাবহার উপযোগী নির্মাণের দিকে ততো বেশী ঝুঁকবে, এবং দিন দিন সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট যতো বাড়বে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরী ক্ষেত্রও থাকবে। তার মানে বলা যায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা এখন যেমন আছে ভবিষ্যতেও থাকবে।

বিশ্বের প্রায় সব দেশই তাদের অবকাঠামোগত ও টেকসই উন্নয়নের দিকে নজরপাত করেছে। এর ফলে বলা যায় দিন দিন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার দের চাহিদা ব্যপক হারে বাড়ছে। গত শতাব্দী বা তারও আগের শতাব্দীতে পৃথিবীতে যেভাবে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে, আগামী শতাব্দীতে তারথেকে কয়েকগুন বেশী উন্নয়ন ঘটবে। এজন্য প্রতিনিয়তই এই সেক্টরের নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে।

দেশ-বিদেশের যতো অবকাঠামোগত উন্নয়ন তার পেছনে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের অবদান অনস্বীকার্য। একজন ডিপ্লোমা ধারী সিভিল ইঞ্জিনিয়ার তার পড়াশোনা শেষ করে সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি এস সি ডিগ্রি অর্জন করতে পারেন। তারপর সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বা প্রকল্পে প্রকৌশলী, উপ-প্রকৌশলী হিসাবেও কাজ করতে পারেন। বিভিন্ন সেক্টরে কাজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বেসরকারি কোম্পানিতে বড় পদে চাকরি করতে পারেন। একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার নিজস্ব ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেও স্বাবলম্বী হতে পারেন।

আমাদের দেশ ধীরে উন্নয়নশীল থেকে উন্নত দেশের দিকে ধাবিত হচ্ছে, আমাদের দেশের জনসংখ্যার পরিমাণও দেশের আয়তনের তুলনায় অনেক বেশী তাই বলা যায়, কম জায়গায় এতো মানুষের চাহিদা ও জীবন মান উন্নত করতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার দের ভূমিকা থাকবে। যেহেতু আমাদের দেশের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরির বিস্তৃতি কম তাও আমাদের অদূর ভবিষ্যতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরির ক্ষেত্র বাড়বে তা বলাই যায়।

সমাজে ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের সম্মানা কেমন

সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে একজন ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের শুরুটা দশম গ্রেড থেকে হয়। সরকারি চাকরিজীবীরা সমাজে বিশেষভাবে মূল্যায়িত হন, কারণ আমাদের দেশে সরকারি চাকরির প্রাধান্য অন্যান্য চাকরির চেয়ে বেশি। তাই ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের সমাজে সম্মানও ভালোই। এছাড়াও তারা সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়ে পদোন্নতি পেয়ে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হলে সমাজে একজন সফল ব্যক্তি হিসেবে মর্যাদা ও সম্মান অর্জন করতে পারেন।

ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের উচ্চ শিক্ষা

পাবলিক ইউনিভার্সিটি (সরকারি):

ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের উচ্চ শিক্ষার জন্য একমাত্র প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (DUET)। যেখানে শুধু মাত্র ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার সুযোগ রয়েছে। এখানে শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে নির্বাচিত হলে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়ে থাকে। এছাড়া সুযোগ রয়েছে, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (SUST), যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (JUST) এবং এসোসিয়েট মেম্বার অফ দা ইনস্টিটিউশন অফ ইঞ্জিনিয়ার্স (AIME)-তে।

বেসরকারি ইউনিভার্সিটি:

বাংলাদেশের প্রায় অধিকাংশ বেসরকারি ইউনিভার্সিটিতে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পেয়ে থাকে শুধুমাত্র হাতেগুনা কয়েকটা ইউনিভার্সিটি ব্যথিত। অনেকগুলো প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশেষভাবে সহযোগিতা করে থাকে। যেমন, এফোর্টেবল টিউশন ফি, সন্ধ্যাকালীন ক্লাস এবং চাকরি করে পড়াশোনার সুযোগ।

বিদেশে উচ্চ শিক্ষাঃ

ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর শিক্ষার্থীরা চাইলেই বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। বর্তমানের ট্রেন্ড অনুযায়ী আমাদের দেশের ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীরা চাইনা, রাশিয়া, ভারত সহ অধিকাংশ দেশে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ গ্রাহণ করতে পারে। যেমন, ইউকে (UK), ইউএসএ (USA), ফিনল্যান্ড (Finland), নেদারল্যান্ড (Netherlands), রোমানিয়া (Romania), ইতালি (Italy), পর্তুগাল (Portugal), ফ্রান্স (Franch), জাপান (Japan), জার্মানি (Germany), পোল্যান্ড (Poland) সহ ইউরোপের এবং পশ্চিমের প্রায় অধিকাংশ দেশে উচ্চ গ্রহণ করতে পারেন। তবে প্রতিটি দেশের রিকুয়ারমেন্ট অনুযায়ী কিছু ক্রাইটেরিয়া ফুল-ফিল করতে হয়। উলেক্ষ্য যে, অসাধ্য কিছু না, চাইলেই সম্ভব। অনেকে পড়াশোনার উদেশ্য বাহিরে গিয়ে, পড়াশোনা শেষ করে বেশ ভালো ক্যারিয়ার গড়েছেন। বিদেশে উচ্চ শিক্ষার প্রন্থা শুধুমাত্র ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য না। ডিপ্লোমাতে অধ্যায়নরত প্রতিটা শিক্ষার্থীর জন্য একই রুলস বিদ্যামান।

একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের যে ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়

একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারকে অবশ্যই শেখার আগ্রহ রাখতে হবে এবং সর্বক্ষেত্রে নিজেকে অন্যান্য ইঞ্জিনিয়ারদের মতোই উন্নত করার মানসিকতা ধারণ করতে হবে। এই দ্রুত পরিবর্তনশীল পৃথিবীতে সবাই নিজেকে প্রতিনিয়ত আপগ্রেড করছে এবং নতুন প্রযুক্তির সাথে মানিয়ে নিচ্ছে। সেই গতির সাথে তাল মিলিয়ে বাজারে টিকে থাকতে হলে অবশ্যই নিজেকে সময়ের সাথে মেধা ও দক্ষতায় উন্নত করতে হবে। নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করতে হবে এবং বিভিন্ন সফটওয়্যার শেখার মাধ্যমে বিশ্বের অন্যান্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের মতো সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। অন্যান্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের মতো একজন ডিপ্লোমা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারকেও তার কর্মক্ষেত্রে যেসব দক্ষতা অর্জন করতে হবে:

টেকনিক্যাল স্কিলঃ

  • অটোক্যাড (AutoCAD): ডিজাইন, ড্রাফটিং ও নকশা তৈরির জন্য অটোক্যাডের দক্ষতা অপরিহার্য। এটি ভবন, সড়ক, সেতু এবং অন্যান্য স্থাপনার নকশা তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়।
  • স্ট্রাকচারাল অ্যানালাইসিস সফটওয়্যার:
    • STAAD.Pro: স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য ব্যবহৃত জনপ্রিয় একটি সফটওয়্যার, যা ভবন ও সেতুর মতো স্থাপনার স্থিতিশীলতা এবং শক্তি বিশ্লেষণে সাহায্য করে।
    • ETABS: বিল্ডিং অ্যানালাইসিস ও ডিজাইনের জন্য এই সফটওয়্যার খুবই কার্যকর।
  • প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার
    • Primavera P6
    • Microsoft Project
  • জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (GIS): অবকাঠামো প্রকল্পে স্থানীয় ডাটা বিশ্লেষণ, ম্যাপিং এবং প্ল্যানিংয়ের জন্য জিআইএস ব্যাবহার করা হয়।
  • SAP2000: স্ট্রাকচারাল মডেলিং এবং বিশ্লেষণের জন্য এটি বহুল ব্যবহৃত একটি সফটওয়্যার, যা বহিরাগত লোড এবং চাপ বিশ্লেষণ করে।
  • রিভিট (Revit): বিল্ডিং ইনফরমেশন মডেলিং (BIM) এর জন্য Revit ব্যবহৃত হয়, যা ভবন ডিজাইন এবং তার জীবনের সকল ধাপ পরিচালনা করে।

সফট স্কিলঃ

  • কমিউনিকেশনঃ ক্লায়েন্ট, দল, ঠিকাদার, এবং অন্যান্য প্রকৌশলীদের সাথে পরিষ্কার ও কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন করা জরুরি। লিখিত ও মৌখিক যোগাযোগ দক্ষতা প্রকল্পের সাফল্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • প্রবলেম সলভিংঃ প্রকল্প চলাকালে বিভিন্ন জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেগুলোর সঠিক সমাধান করতে দক্ষতা থাকা প্রয়োজন।
  • লিডারশীপঃ প্রকল্পের বিভিন্ন দল এবং কর্মীদের নেতৃত্ব দেওয়া ও তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়ার ক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • টাইম ম্যানেজমেন্টঃ সময়মতো কাজ সম্পন্ন করা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। কাজের সময়সূচি নির্ধারণ এবং সময়মতো ডেলিভারি নিশ্চিত করা দক্ষতার প্রমাণ।
  • টিমওয়ার্কঃ সিভিল প্রকল্পে বিভিন্ন পেশাদারদের সাথে দলগতভাবে কাজ করার দক্ষতা খুবই জরুরি। দলকে মোটিভেট করা এবং সমন্বয় বজায় রাখা প্রকল্পকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে।
  • ক্রিয়েটিভিটিঃ সমস্যার নতুন ও উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করার ক্ষমতা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের পেশায় সফলতা আনে। বিশেষ করে, প্রকল্পে কার্যকর এবং টেকসই ডিজাইন তৈরি করতে সৃজনশীলতা প্রয়োজন।

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের চাকরির ক্ষেত্র সমহূ

সরকারিঃ

একজন শিক্ষার্থী ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা শেষ করে বাংলাদেশে দশম গ্রেডে সরকারি চাকরিতে জয়েন দিয়ে থাকেন। একত্রে শিক্ষার্থীকে অবশ্যই প্রতিযোগিতা মূলক পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হবে। বিভিন্ন ধাপে একজন ক্যান্ডিডেটকে যাচাই-বাঁচাই করে নিয়োগ দিয়ে থাকে কর্তৃপক্ষ। নিচে একটি টেবিল দেওয়া হল, যেখানে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-সরকারি, রাষ্ট্রয়াত্ত, জাতীয়করণকৃত এবং সরকারি বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে তালিকা উল্লেখ্য আছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা চাকরির সুযোগ পেয়ে থাকে। এছাড়া সময়ে সময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ হয়ে থাকে। যা এখানে উল্লেখ নাও থাকতে পারে।

ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রসমূহ
❏ পাওয়ার সেক্টর:
  • BPDB (বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড)
  • PGCB (পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ)
  • EGCB (ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশ)
  • DPDC (ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড)
  • DESCO (ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড)
  • NWPGCL (নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি)
  • RPCL (রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড)
  • B-R Powerzen
  • NPCBL (নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি বাংলাদেশ)
  • BCPCL (বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি)
  • CPGCBL (কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ)
  • WZPDCL (ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড)
❏ গ্যাস সেক্টর:
  • গ্যাস অনুসন্ধান এবং উৎপাদন কোম্পানি:
  • বাপেক্স (বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন এন্ড প্রোডাকশন কোম্পানী লিমিটেড)
  • টিজিটিডিসিএল (বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড)
  • এসজিএফএল (সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড)
  • গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি:
  • জিটিসিএল (গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড)
  • গ্যাস বিপনন কোম্পানি:
  • তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড
  • বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেড
  • জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন এ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড
  • পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড
  • কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড
  • সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড
  • এলএনজি, সিএনজি ও এলপিজি এবং খনন কোম্পানি:
  • আরপিজিসিএল (রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানী লিমিটেড)
  • বিসিএমসিএল (বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানী লিমিটেড)
  • এমজিএমসিএল (মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানী লিমিটেড)
❏ আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ:
  • বাংলাদেশ ব্যাংক (BB)
  • সোনালী ব্যাংক
  • রূপালী ব্যাংক
  • অন্যান্য ব্যাংক
❏ রিসার্চ ইন্সটিটিউট:
  • Rice Research Institute (RRI)
  • Bangladesh Agricultural Development Corporation (BADC)
  • Bangladesh Agricultural Research Institute (BARI)
  • Bangladesh Rice Research Institute (BRRI)
  • Bangladesh Atomic Energy Commission (BAEC)
  • Bangladesh Rural Development Board (BRDB)
  • Bangladesh Standards and Testing Institution (BSTI)
  • Bangladesh Chemical Industries Corporation (BCIC)
❏ অন্যান্য সেক্টরসমূহ:
  • Bangladesh Water Development Board (BWDB)
  • Water Supply and Sewerage Authority (WASA) [ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী]

বেসরকারিঃ

ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য বেসরকারি চাকরির সুযোগ বর্তমানে বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান। কারণ দেশের উন্নয়নশীল অবকাঠামো এবং নির্মাণ শিল্পে দক্ষ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। একজন ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভিন্ন দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে বিভিন্ন সেক্টরে কাজের সুযোগ পেয়ে থাকে প্রাইভেট সেক্টরে। নিচে একটা তালিকা দেওয়া হল তবে ক্ষেত্র বিশেষে অন্যান্য প্রাইভেট জব সেক্টর বা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে থাকে।

ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য বেসরকারি সেক্টরসমূহ
  • নির্মাণ কোম্পানি
  • রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার
  • ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠান
  • প্ল্যান্ট ও ফ্যাক্টরি কনস্ট্রাকশন কোম্পানি
  • রোড ও হাইওয়ে ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি
  • ব্রিজ এবং ওভারপাস নির্মাণ প্রতিষ্ঠান
  • আর্কিটেকচারাল ফার্ম
  • কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান
  • হাউজিং এবং ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি
  • গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি
  • জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান
  • ওয়াটার সাপ্লাই ও স্যানিটেশন কোম্পানি
  • টেলিকমিউনিকেশন টাওয়ার এবং সাইট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান
  • সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি
  • রোড মেইনটেনেন্স ও অপারেশন কোম্পানি

একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের কাজ কী

স্থাপনা নকশা ও পরিকল্পনা: বিল্ডিং, সেতু, সড়ক, বাঁধ এবং অন্যান্য অবকাঠামোর নকশা ও পরিকল্পনা তৈরি করা।
নির্মাণ তদারকি: প্রকল্পের নির্মাণ কাজ সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে কিনা, তা তদারকি করা এবং নির্মাণমান নিয়ন্ত্রণ করা।
মাটি ও নির্মাণ সামগ্রী পরীক্ষা: নির্মাণস্থলের মাটির গুণগত মান এবং ব্যবহৃত নির্মাণ সামগ্রীর মান পরীক্ষা করা।
প্রকল্প বাজেট প্রস্তুত: প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ ও বাজেট তৈরি করা এবং প্রকল্প সময়সূচী পরিকল্পনা করা।
নিরাপত্তা নিয়মাবলী মেনে চলা: কাজের সময়ে নিরাপত্তা বিধান নিশ্চিত করা এবং নিয়ম অনুযায়ী কাজ পরিচালনা করা।
প্রকল্প ব্যবস্থাপনা: সময়সীমা, বাজেট এবং নির্মাণ সামগ্রী পরিচালনা করা ও প্রকল্পের অগ্রগতি মনিটর করা।
গ্রাহক ও স্টেকহোল্ডারদের সাথে যোগাযোগ: প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে গ্রাহক ও স্টেকহোল্ডারদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা।
প্রকৌশল সমস্যা সমাধান: প্রকল্প চলাকালীন উদ্ভূত যেকোনো সমস্যা নির্ণয় ও সমাধান করা।
প্রকল্পের সমাপ্তি পর্যালোচনা: প্রকল্প সমাপ্তির পর মান ও কাজের গুণগত মান পর্যালোচনা করা।

বেতন কাঠামো

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের বেতন কাঠামো সাধারণত সরকারি দশম গ্রেড অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। এই কাঠামো অনুযায়ী, একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার দশম গ্রেডে চাকরি শুরু করলে তার মূল বেতন ১৬,০০০ টাকা। এর সাথে অতিরিক্ত ভাতা যোগ করে বেতন বৃদ্ধি পায়, যার মধ্যে রয়েছে ৯,৬০০ টাকার বাড়িভাড়া ভাতা এবং ১,৫০০ টাকার চিকিৎসা ভাতা। ফলে মোট বেতন-ভাতাদি দাঁড়ায় ২৭,১০০ টাকা। এই বেতন কাঠামো একজন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারের চাকরির প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ধারিত হয় এবং অভিজ্ঞতা ও পদোন্নতির সাথে এটি বাড়তে থাকে। এছাড়া স্বায়ত্তশাসিত, আধা-সরকারি, রাষ্ট্রয়াত্ত, জাতীয়করণকৃত এবং সরকারি বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে একজন ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ৪৫,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ৮০,০০০ টাকা পর্যন্ত বেতন পেয়ে থাকেন।

বেসরকারি চাকরির ক্ষেত্রে একজন ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ট্রেইনি অর্থাৎ ইন্টার্ন হিসেবে ৫০০০ টাকা থেকে শুরু করতে পারে। ইন্টার্ন শেষে ১৫,০০০ টাকা থেকে ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত মাসিক বেতন পেয়ে থাকেন। তবে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান ভেদে বেতন কাঠামো ভিন্ন হওয়ায় সঠিক ডেটা নিয়ে আসা সম্ভব না। চাকরির অভিজ্ঞতা বাড়ার সাথে সাথে একজন ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের বেতন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

ফিউচার ট্রেন্ড ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং

সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে, এবং ভবিষ্যতের কিছু প্রবণতা এই পেশাকে আকর্ষণীয়ভাবে রূপ দিচ্ছে। একটি বড় প্রবণতা হলো টেকসই এবং পরিবেশ-বান্ধব নির্মাণ প্রযুক্তির ব্যাবহার, যা পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। স্মার্ট সিটি এবং প্রযুক্তি নির্ভর অবকাঠামো উন্নয়ন, যেমন ইন্টারনেট অব থিংস (IoT) এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI)ব্যাবহার, ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে, যা শহরের বিভিন্ন সিস্টেমের বাস্তবসম্মত পর্যবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনাকে সহজতর করছে।

তাছাড়া, বিল্ডিং ইনফরমেশন মডেলিং (BIM) প্রযুক্তির ব্যাবহার প্রকল্প পরিকল্পনা ও সহযোগিতায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে, যা ইঞ্জিনিয়ারদের জটিল কাঠামো ডিজাইন এবং সঠিকভাবে বাস্তবায়নে সহায়তা করছে। নির্মাণশিল্পে স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ও রোবোটিকসের ব্যাবহারও বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে। ভবিষ্যতে প্রতিযোগিতামূলক ও উদ্ভাবনী থাকতে হলে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদের এই প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে।

শেষ কথা

ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়াররা সাধারণত বাস্তবিক কাজে বেশি সম্পৃক্ত থাকে এবং তাদের কাজের ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ, পরিকল্পনা, এবং তদারকি। সরকারি ও বেসরকারি উভয় সেক্টরেই তাদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। তারা সাধারণত বিভিন্ন নির্মাণ কোম্পানি, গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ সংস্থা, পরিবহন বিভাগ, এবং স্থাপত্য ফার্মে কাজ করে।

এই পেশার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল ডিপ্লোমা ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারদেরকে প্রযুক্তি ও নতুন সফটওয়্যারের সাথে মানিয়ে নিতে হয়, যাতে তারা সময়ের সাথে নিজেদের দক্ষতাকে আরও উন্নত করতে পারে।

শেয়ার করুন বন্ধুদের সাথে

লেখক সম্পর্কে

Abinobo School

নিউজ
চাকরি
Home
Question
Search